হিস্টিরিয়া / বায়ুরোগ Hysteria হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

হিস্টিরিয়া / বায়ুরোগ Hysteria হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

হিস্টিরিয়া একটি মানসিক রোগ। অথচ আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে বা শহরে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন কুসংস্কার, অপবিশ্বাস, অন্ধকারাচ্ছন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা এ অসুখের সঠিক চিকিৎসা করায় না। তারা ঝাড়ফুঁক করায়। এ ধরনের অপচিকিৎসা করার ফলে সময়ের বিলম্ব হয় এবং রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে।

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন হিস্টিরিয়া বা মূর্ছা রোগের জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা। ওষুধের পাশাপাশি নিন্মোক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করেন চিকিৎসক। হিস্টিরিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার একটি মূল অংশ হলো হিস্টিরিক্যাল নানা ধরনের উপসর্গ সম্পর্কে রোগীকে বারবার সাহস, আশ্বস্তকরণ ও সাজেশন বা পরামর্শ এবং অভিভাব্যতা ইত্যাদি দিয়ে উপসর্গগুলো দূর করা। রোগীর সাথে খোলামেলা আলাপ করে তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, মানসিক কারণ থেকে দৃষ্ট এ রোগ শারীরিক কারণ থেকে নয়। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা সাইকোথেরাপির মাধ্যমে রোগীর সাথে কথা বলে তার মনের সঙ্ঘাত জেনে এবং তা দূর করার জন্য চেষ্টা করেন। পরে রোগী যাতে ওইজাতীয় সমস্যার মোকাবেলা সহজেই করতে পারে তার ব্যবস্থা করেন।

এব্রিয়েকশন বা ড্রাগ ইন্ডউজড হিপনোসিস (সম্মোহন)। এটি একটি মেডিক্যাল টার্ম। এই বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীর মনের নির্জ্ঞান বা অচেতন স্তরে যেসব মানসিক সঙ্ঘাত বা দ্বন্দ্ব রয়েছে সেগুলো বেরিয়ে আসে। একটি বিশেষ ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা রোগীকে একধরনের তন্দ্রাচ্ছন্ন বা ঘুমিয়ে যায় এ রকম অবস্থায় নিয়ে যান। এ অবস্থায় মনের যে মানসবৃত্তি বিরাজ করে তাতে করে তার মনের অচেতন স্তরে দ্বন্দ্বগুলো প্রকাশিত হয়ে পড়ে। এব্রিয়েকশন চলাকালীন মনোচিকিৎসক রোগীকে যেসব প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন রোগী সেসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় এগুলো রোগীর সচেতন মনে বিরাজ করে না। তাই সচেতনভাবে রোগী এগুলো ডাক্তারের কাছে প্রকাশ করতে পারে না। এই পদ্ধতির মাধ্যমে রোগী তার মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা দ্বন্দ্ব, সংঘাত বা আবেগগুলো প্রকাশ করে মনের ভার লাঘব করতে পারে।

মনোচিকিৎসক রোগীর রোগের উপসর্গ ও লক্ষণগুলো কী জন্য হচ্ছে তার ওপর ফোকাস করে চিকিৎসা চালিয়ে যান এবং স্বাভাবিক আচরণ করার জন্য রোগীকে বারবার সাহস জোগানো হয়। রোগিণী যদি বিবাহিতা হয়ে থাকে তবে অবশ্যই স্বামীকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দরকার হলে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ফ্যামিলি কাউন্সিলিং এবং পরে স্বামী-স্ত্রীর জন্য কাপল থেরাপির (দাম্পত্যজনিত একধরনের মনোচিকিৎসা) দরকার হতে পারে।

Ignetia: পরিবর্তনশীল মেজাজ। এই হাসে এই কাঁদে। মনের মাঝে ক্ষোভ চেপে রাখে। শোক দুঃখ ভয় বা প্রেমে ব্যর্থ। ৩০-২০০ শক্তি ফলপ্রদ।

Nux Moschata: হিষ্টিরিয়ার উত্তম ঔষধ। পরিবর্তনশীল মন। এই হাসে এই কাঁদে। দুর্বল, কখনো কখনো অজ্ঞান হয়ে পড়ে। দাঁত লাগে/ চোয়াল ধরে, মাঝে মাঝে খিঁচুনি হয়। গর্ভাবস্থায় হিস্টিরিয়া। ৬-৩০ শক্তি উপকারী।

Valareiana: পরিবর্তনশীল মেজাজ। এই হাসে এই কাঁদে, এই মাত্র রাগান্বিত আবার পরক্ষণেই শান্ত-নম্র। Q শক্তি।

Conium: চির কুমার/ কুমারী, বিধবা যুবতী, কামেচ্ছা দমন রাখার ফলে হিস্টিরিয়া। ২০০ শক্তি অব্যর্থ।

Pulsetilla: নম্র, কোমল মন, অভিমানী, শীতকাতর, উন্মুক্ত বাতাস প্রিয় এমন রোগীর ঋতুর গোলযোগ হেতু হিস্টিরিয়া। ৩০-২০০ শক্তি।

বায়োকেমিকঃ
Kali Phos: হিস্টিরিয়ার প্রধান ঔষধ। যে কোন কারণেই হোক না কেন ৬x-১২x শক্তি সেব্য।

Nat.Mur: জরায়ুপীড়াগ্রস্থ রমনী। লবনপ্রিয়, বিষন্ন, খিটখিটে মেজাজ, সান্ত্বনা দিলে রেগে যায়, গরমকাতর, এমন নারীদের জন্য প্রযোজ্য। ১২x শক্তি উত্তম।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন