র্মরোগ (Skin Diseases) এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

এটোপিক ডার্মাটাইটিস
এর কারণ অজ্ঞাত এবং বংশগত ব্যাপার এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত শিশুদের হয়। মুখমন্ডল, মাথার চর্ম এবং হাত-পায়ে লাল পানিপূর্ণ কঠিন ক্ষত হয়, চুলকানি হয়। সন্তান বেড়ে ওঠার সাথে সংশ্লিষ্ট স্থানের পরিবর্তন হয়। শুকনো ত্বক এই রোগের একটি বৈশিষ্ট্য। দীর্ঘস্থায়ী এটোপিক ডার্মাটাইটিসের ক্ষেত্রে কব্জি, গোড়ালি হাঁটুর পেছনভাগ এবং কনুইয়ের সম্মুখভাগে পুরু, খসখসে এবং অতিরঞ্জক চর্মের বিকাশ ঘটতে পারে। চিকিৎসার প্রথম উদ্দেশ্য হলো শুষ্কতা ও চুলকানি কমিয়ে আনা। রোগীর গোসল সীমিত করতে হবে, বিশেষ করে শীতের মাসে এবং চর্মের শুষ্কতা দূর করতে চর্ম কোমল করে এমন পদার্থ ও পিচ্ছিল উপাদান ব্যবহার করতে হবে। কর্কশ, অমসৃণ কাপড় পরিহার করতে হবে।

সোরিয়াসিস
কারণ অজ্ঞাত। তবে বংশগত ব্যাপার জড়িত। কেননা, সোরিয়াসিস সচরাচর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘটে। সোরিয়াসিস চর্মের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা যা সাধারণত ১০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকে মামড়ি হয়। সচরাচর এই রোগ দেখা দেয় কনুই, হাঁটু, নিতম্বের খাঁজ এবং মাথার ত্বকে। নখের রঙ হলুদ বর্ণের হয়। সে সাথে নখের ওপর ছোটখাটো গর্ত দেখা যায়। আঘাতজনিত টিস্যুতে সোরিয়াসিস হতে পারে। ছোটদের ক্ষেত্রে এ রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশের অসুস্থতা এবং ফ্যারিংসে প্রদাহ দেখা দেয়।

একজিমা
একজিমা নানা ধরণের এবং যেকোনো ত্বকের প্রদাহ থেকে হতে পারে। হাতের একজিমা দীর্ঘ সময় পানি এবং ডিটারজেন্টের সংস্পর্শে থাকার ফলে হতে পারে। উপসর্গগুলোর মধ্যে ত্বকে শুষ্কতা, চুলকানি, ফাটল দেখা দেয়, ত্বক লাল হয়ে যায় এবং পানি জমতে পারে।

স্ক্যাবিস
সারকোপটেস স্ক্যাবি জীবাণু যা কেবল চর্ম গর্তে দেখা যায়। সংক্রমণ প্রধানত ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে ছড়ায়। স্ক্যাবিসে তীব্র চুলকানি হয়, বিশেষ করে রাতে চুলকানি খুব বেশি বেড়ে যায়। চুলকানির ফলে নখের আঁচড়ে ফুসকুড়ি ওঠে, শরীরে লাল দানা সৃষ্টি হয়। আঙ্গুল, হাত, কনুই বগলের সামনের ভাঁজে মহিলাদের স্তনবৃন্তে, পুরুষের লিঙ্গে, অন্ডথলিতে, নিতম্বে ও গোড়ালিতে চুলকানি হয়।

Graphyties: সন্দেহপ্রবণ- স্থুলকায়- শীতকাতর রোগীর কানের পাশে, মুখে, মাথায়, চোখের পাতায়, জননেন্দ্রিয়ে, অন্ডকোষে, হাতে, আঙ্গুলে, পায়ের নখে বিভিন্ন স্থানের চামড়া মোটা হয়ে ভীষণ চুলকানী। ক্ষত হতে মধুর মত আঁঠালো রস ঝরে। প্রাথমিক অবস্থায় ৩x-৩০শক্তি, পুরনো হলে ২০০- উচ্চশক্তি ফলপ্রদ।

Pteroleum: শীতকাতর রোগীর শীতকালীন চর্মরোগে বিশেষ উপকারী। হাত-পা ফাটা, শুস্ক বা রসযুক্ত চলকানী যা শুধু শীত এলেই প্রকাশ পায় গৃষ্ম এলে একাই সেরে যায়। ৩০-২০০ শক্তি উপকারী।

Kali Bich: শীতকাতর রোগীর বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ যা গৃষ্মকালে/ গরমে দেখা দেয় শীত এলে একাই সেরে যায় (পেট্রোলিয়ামের বিপরীত)। গরম ভাল লাগে তবে গৃষ্মকাল তার অসহ্য। ২০০-উচ্চশক্তি অব্যর্থ।

Mezerium: বিভিন্ন স্থানের একজিমা খুজলী পাঁচরা তার উপর মামড়ি/চটা পড়ে, মাড়িরর নিচে হলুদ বা সাদা গাঢ় পূঁজ জমে। ভীষন চুলকানীযুক্ত মাথার একজিমায় ফলপ্রদ। নতুনদের ৩x-৩০ শক্তি, পুরনোদের ২০০-উচ্চশক্তি।

Cicuta Virossa: মাথায় পূঁজপূর্ণ ফুস্কুরি, লেপাকৃত হয়ে ঘায়ে পরিণত হয়। মামড়ি/চটা পড়ে, মাড়িরর নিচের হলুদ রঙের পূঁজ সারা মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। ২০০-উচ্চশক্তি ভালো।

Psorinum: শীতকাতর রোগী, নোংরা থাকে, প্রস্রাবে বা শরীরে মুখে, আক্রান্তস্থানে খোস পাঁচরা চুলকানীতে ভীষণ দুর্গন্ধ। ২০০-১এম শক্তি। পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তি।

Arsenic Alb: সৌখিন পরিচ্ছন্ন শীতকাতর রোগীর একজিমায় অত্যান্ত চুলিকানী, চুলকাইতে ভাল লাগে কিন্তু চুলিকানী শেষে ভয়ানক জ্বালা, সেই জ্বালা গরম জলে বা উত্তাপে উপশম হয়। ৩০-২০০ শক্তি, পুরনো হলে উচ্চশক্তি উপকারী।

Sulpher: একজিমা খুজলী পাঁচরা বিখাউজ সহ নানা চর্মপীড়া। অত্যন্ত চুলকানি, যতই চুলকায় ততই চুলকানী বাড়ে। গরমকাতর, স্নানে অনীহা, স্নানের পর সমস্ত লক্ষণ বৃদ্ধি পায়। ৩x-৩০ শক্তি, পুরনো হলে উচ্চশক্তি উপকারী।

Antim Crud: গোসলে অনিচ্ছা, হাতে, কনুইয়ে, হাঁটুতে, পায়ে, নিতম্বে পদ্মকাটার মত উদ্ভেদ, চুলকায়। জিহ্বা সাদা। ৩০-২০০ শক্তি, পুরনো হলে উচ্চশক্তি উপকারী।

Rhus Tox: হাঁটুর ভাঁজে বিখাউজ, চুলকায়, রস পড়ে, সাথে Ledum Pal ৩০-২০০ শক্তি উপকারী। বর্ষাকালীন চর্মরোগে Rhus Tox এর সাথে Dulcamara ৩০শক্তি উপকারী।



বায়োকেমিকঃ
B.P- 20

Cal.flour: বিভিন্ন স্থানের ফাঁটা ফাঁটা চর্মরোগ, শীতকালীন হাত-পা ফাঁটা। ১২x শক্তি অব্যর্থ।




নবীনতর পূর্বতন