সাদাস্রাব কেন হয়।


মহিলাদের সন্তান প্রসব হওয়ার যে (পথ বা রাস্তা) সে পথে এক প্রকার ঘন স্রাব হওয়াকে প্রদর বা লিকোরিয়া বলে। মনে রাখবেন- ইহা কোন রোগ নয়, সাদাস্রাব বা লিকোরিয়া রোগের লক্ষন বা উপসর্গ মাত্র।
অনেক মহিলাদের বিয়ের আগে ও পরে এই রোগ হয়। কিন্তু অনেকে লজ্জায় বা অবহেলা করে নিজের নিকট তা লুকিয়ে রাখে। অনেকে এটাকে তেমন গুরুত্বও দেয়না। তবে ইদানিং মহিলাদের শিক্ষিত হার বেড়ে যাওয়াতে অনেক সচেতনতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন একে অন্যের নিকট বিভিন্ন সমস্যার কথা শেয়ার করে। যার কারনে এখন এই রোগের চিকিৎসা করে অনেকে সুস্থ আছেন।

কেন সাদা স্রাব হয়ঃ-
সাদাস্রাব হওয়ার পিছনে অনেক গুলো কারন জড়িত।
১. প্রধান কারন হল ইনফেকশন। মহিলাদের জরায়ু “ওপেন অরগ্যান” উন্মুক্ত অংগ গুলোর মধ্যে একটি। যেহেতু জরায়ু উন্মুক্ত থাকে, তাই যে কোন ভাবে এইখানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
২. মলদ্বার বা পায়ুদেশ থেকে জীবানু আসিয়া খুব সহজেই জরায়ুতে ইনফেকশন হতে পারে।
৩. পুরুষের মাধ্যমেও এই রোগ হতে পারে। ট্রাইকোমানো এবং মোনালিয়া এই দু’টি ইনফেকশনযৌন রোগের জীবানু বহনকারী পুরুষের মাধ্যমে স্ত্রীলোকদের মধ্যে সংক্রমিত হয়।
৪. মোনালিয়া জীবানু দ্বারা আক্রান্ত জরায়ুতে চুলকানি হয় এবং ব্যথা করে। ঘন হলুদের মত স্রাব হয়।
৫. ট্রাইকোমানো জীবানু দ্বরা আক্রান্ত জরায়ুতে জ্বালাভাব থাকে, চুলকানি হয়, জরায়ু একটু ফুলিয়া যায়, লালচে হয়ে যায়। ফেনাটে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হয়।
৬. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবের কারনে এই রোগ হতে পারে।
৭. জম্ম নিরোধক বড়ি হতেও এই রোগ হতে পারে।
৮. ঋতুস্রাবের পরবর্তী প্রযায়ে গর্ভপাত করালে, ইত্যাদি কারনে হতে পারে।
৯. মেয়েদের বা মহিলাদের মাসিক বা ঋতুচক্র আরম্ভ হলেঅনেকে ময়লা অপরিষ্কার নেকরা বা কাপড় কিংবা অপরিষ্কার পেন্টি ব্যবহার করেন। যার কারনে জরায়ুতে ইনফেকশান হয়ে এই রোগ হয়।
১০. মানসিক রোগ হতেও লিকোরিয়া বা সাদা স্রাব হতে পারে।
১১. শরীরের যক্ষ্মা, রক্তহীনতা, ভিটামিনের অভাবে এই রোগ হতে পারে
১২. বৃদ্ধ বয়সে শরীরের চামড়া শুকাইয়া যায়, কুচকাইয়া যায়। সে সময় জরায়ু শুকাইয়া গেলে এই রোগ হতেপারে।

সাদা স্রাব রোধে পরামর্শঃ-
১. সহবাসের পর যেসব মহিলাদের লালচে বা গোলাপি স্রাব হয়, তাহাদের খুব শীগ্রি ডাক্তারের নিকট যাওয়া উচিৎ।এমনকি যদি দু’টি পিরিয়ডের মাঝখনে পিংক ডিসচার্জ হয় তাহলেও ডাক্তার দেখাতে হবে। যদি পিরিয়ডের মাঝামাঝি সময়ে পানির মত পাতলা স্রাব হয়, তাহলে ভয়ের কিছুনাই।
২. এই রোগের চিকিৎসা (বিবাহিত হলে) স্বামী স্ত্রী দু’জনকে একসাথে করতে হবে। কেননা স্বামীর নিকট থেকে প্রবত্তীতে আবার স্ত্রী ইনফেকশন হতে পারে।
৩. সংক্রমণ এড়াইতে হইলে একটাই উপায়- তা হল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
৪. মাসিক বা ঋতুচক্রেপরিষ্কার জীবানুমুক্ত (ডেটল বা সেবলন) দিয়ে কিংবা ভালভাবে সাবান দিয়ে পেন্টি বা কাপড় জীবানুমুক্ত করে তা ব্যবহার করতে হবে।
৬. প্রদর বা সাদাস্রাব যাওয়া অবস্থায় কোন প্রকার মিলন বা সহবাস করা যাবেনা।
৭. পুষ্টিকর বা বল বৃদ্ধিকারক খাবার খাইতে হইবে।

নবীনতর পূর্বতন