মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে বা বন্ধ হলে মস্তিষ্কের কলাগুলো
অক্সিজেন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান পায় না ফলে স্ট্রোক হয়। স্ট্রোকের কিছুক্ষণের
মধ্যেই মস্তিষ্কের কোষগুলো মরতে শুরু করে।
প্রকারভেদঃ-
মোটাদাগে স্ট্রোক দু’প্রকার। একটি ইসচেমিক (Ischemic) স্ট্রোক এবং
অন্যটি হেমারোজিক (Hemorrhagic) স্ট্রোক। ইসচেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের কোন
একটি অংশের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় আর হেমারোজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্তক্ষণ
ঘটে।
লক্ষণঃ-
দু’ধরনের স্ট্রোকের ক্ষেত্রেই একই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। মস্তিষ্কের কোন এলাকায়
রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলো, কতটা এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হল ইত্যাদি বিষয়ের ওপর লক্ষণগুলো
পরিবর্তিত হয়। যে কোন ধরনের স্ট্রোকের ক্ষেত্রেই দ্রুত চিকিৎসককে দেখানো উচিত। দেরি
করলে নতুন নতুন লক্ষণ দেখা দেয় এবং এক পর্যায়ে সেটি সারিয়ে তোলা কঠিন হতে পারে।
* মাথা ঘোরা, হাটতে অসুবিধা হওয়া, ভারসাম্য রক্ষায় অসুবিধা হওয়া
* কথা বলতে সমস্যা হওয়া
* অবশ, দুর্বলতা লাগা, শরীরের এক পাশ অকেজো হওয়া
* চোখে ঘোলা লাগা, অন্ধকার লাগা বা ডাবল দেখা, হঠাৎ চোখে কিছু না দেখা
* হঠাৎ খুব মাথা ব্যথা
কাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ?
স্ট্রোক এবং হৃদরোগ আলাদা হলেও ঝুঁকির কারণগুলো প্রায় একই। সাধারণত ৫৫ বছরের
বেশি বয়সী পুরুষের স্ট্রোক বেশি হয়।
* অনিয়মিত উচ্চ রক্তচাপ, যারা মাঝে মাঝে প্রেশার কমানোর ঔষধ খেয়ে থাকেন ।
* অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস
* ধূমপায়ী
* বিভিন্ন রকম হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী
* মেদ বা চর্বির কারণে স্থুলকায় ব্যক্তি
* মদ্যপান
* পারিবারিক ইতিহাস
* যারা নাড়াচাড়া অথবা কায়িক পরিশ্রম কম করেন ।
সতর্কতাঃ-
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর পাঁচ লাক লোক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং দেড় লাখ লোক
মারা যায়। বেঁচে যাওয়া অনেকেই পঙ্গুত্বের শিকার হয়। করোনারী হার্ট ডিজিজ এবং ক্যান্সারের
পর স্ট্রোকই মৃত্যুর বড় কারণ। ঝুঁকির কারণগুলো এড়িয়ে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমে
স্ট্রোকের সম্ভবনা বা আশঙ্কা আনেকটা কমিয়ে আনা যায়।
করণীয়ঃ-
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
* সম্পৃক্ত চর্বি যেমন যেমন প্রাণীজ তেল, ডিমের লাল অংশ, ঘি, মাখন, অথবা জমে
যায় এমন ধরনের যে কোন তেল খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে।
* ধূমপান একেবারেই করা যাবে না।
* পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন সয়াবিন তেল খাওয়া যাবে। মাছ এবং মাছের তেলও
উপকারী।
* এন্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন সি, ই এবং বিটা ক্যারেটিন সমৃদ্ধ খাবার স্ট্রোকের
ঝুঁকি কমায়।
* একবার স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের জন্য লো ডোজ অ্যাসপিরিনও বেশ উপাকারী, আবার
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
* নিয়ম মাফিক খাবার খাওয়া
* সতর্ক ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
* নিয়ম করে হাটা বা হালকা দৌড়ানো
* দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা
* মাদক না নেয়া , মদ্যপান না করা